পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার অধ্যক্ষের ভূমিকা । পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার অধ্যক্ষ - Political Science Notes Online

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার অধ্যক্ষের ভূমিকা

 রাজ্য আইনসভার নিম্নকক্ষ বিধানসভার সভাপতি হিসেবে বিধানসভায় স্পিকারের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । বিধানসভার মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব বহুলাংশে স্পিকারের ওপর নির্ভর করে । এ কারণে বিধানসভায় স্পিকারকে কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হয় । 

( 1 ) সুষ্ঠুভাবে সভার কাজ পরিচালনা করা : বিধানসভার অধ্যক্ষের প্রধান কাজ হল বিধানসভার কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা । সভায় কি ধরনের প্রশ্ন উত্থাপিত হবে , কোন্ নোটিশ আলোচনার জন্য গৃহীত হবে , কোন্ সংশোধনী প্রস্তাব গৃহীত হবে ইত্যাদি বিষয়ে তাঁকে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে হয় এবং এ বিষয়ে তাঁর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত । 


( 2 ) সভায় শান্তি - শৃঙ্খলা বজায় রাখা : সভায় শান্তি - শৃঙ্খলা বজায় রাখার দিকে তাঁকে দৃষ্টি দিতে হয় । কোন্ সদস্যকে প্রথমে বলতে দেওয়া হবে , কোন্ প্রশ্নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে তা তিনি ঠিক করেন । সভায় বিশৃঙ্খলার সম্ভাবনা দেখা দিলে তা নিরসন বা কোনো সদস্য অপমানজনক কোনো উক্তি করলে তা প্রত্যাহার করা বা কোনো সদস্য ক্রমাগত বিশৃঙ্খল আচরণ করলে তাঁকে তিরস্কার করা বা সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা ইত্যাদি কাজ তাঁকে করতে হয় । আবার বিশৃঙ্খলারোধে প্রয়োজন মনে করলে তিনি সভার অধিবেশন সাময়িকভাবে মুলতুবি রাখতে পারেন ।


 ( 3 ) অর্থবিল সংক্রান্ত :  কোনো বিল অর্থবিল কি না সে - সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন দেখা দিলে সে - বিষয়ে অধ্যক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত । এ ছাড়া অর্থবিল বিধান পরিষদে ও রাজ্যপালের কাছে প্রেরণের সময় অধ্যক্ষকে বিলটি যে অর্থবিল সে - বিষয়ে প্রমাণপত্র দাখিল করতে হয় । 


( 4 ) সদস্যদের অধিকার সংক্রান্ত : বিধানসভার সদস্যগণ যে - বিশেষাধিকার ভোগ করেন তা রক্ষার দায়িত্ব স্পিকারের । তাঁর অনুমতি ছাড়া কোনো সদস্যের জীবন ও সম্মান খর্ব করা যায় না ।


 ( 5 ) বিধানসভার মুখপাত্র : বিধানসভার স্পিকার বিধানসভার মুখপাত্র হিসেবেও কাজ করেন । তিনি রাজ্যপাল ও বিধানসভার মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকেন । রাজ্যপালের বক্তব্য , বাণী , বার্তা প্রভৃতি স্পিকারের মাধ্যমে বিধানসভায় উপস্থাপিত হয় । বক্তব্য ও তথ্যাদি নিয়ে স্পিকার রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলেন । 


( 6 ) ভোটাভুটির ব্যবস্থা করা : স্পিকার প্রয়োজনবোধে বিধানসভায় কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ভোট গ্রহণ করতে পারেন । ভোটের ফলাফল তিনিই ঘোষণা করেন । কিন্তু তিনি নিজে ভোট দিতে পারেন না । তবে দু - পক্ষে সমান ভোট পড়লে তিনি একটি নির্ণায়ক ভোট দিতে পারেন ।


 ( 7 ) পদত্যাগপত্র গ্রহণ ও সদস্যপদ বাতিল : বিধানসভার কোনো সদস্য পদত্যাগ করতে চাইলে তিনি স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র পেশ করেন । তবে স্পিকার যদি মনে করেন যে , পদত্যাগপত্র চাপ দিয়ে আদায় করা হয়েছে , তাহলে তিনি সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ নাও করতে পারেন , আবার তিনি বিধানসভার সদস্যপদ বাতিলও করতে পারেন ।


 ● মূল্যায়ন : উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ও কাজের ব্যাপকতা লক্ষ করে তাঁর ভূমিকার পর্যালোচনা করে বলা যায় যে , পশ্চিমবঙ্গে অধ্যক্ষের পদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ ।

Post a Comment

Previous Post Next Post