ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের গঠন, উদ্দেশ্য,ক্ষমতা , বৈশিষ্ট্য, কার্যাবলী - Political Science Notes Online


ক্রেতাসুরক্ষা আদালত


ক্রেতাসুরক্ষা আদালত এক বিশেষ ধরনের আদালত যা ক্রেতাদের অধিকার রক্ষার জন্য ভারতে গঠন করা হয়েছে । তাই এই আদালতগুলিকে বিশেষ উদ্দেশ্যমূলক আদালত হিসেবে অভিহিত করা হয় ।

 এই আদালত ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে বিবাদ এবং ক্রেতার অভিযােগ মীমাংসার জন্য গঠিত হয়েছে ।



 ক্রেতাসুরক্ষা আইন : 


1986 খ্রিস্টাব্দে Consumer Protection Act এবং এই সংক্রান্ত সংশােধনী আইনের ভিত্তি হল ক্রেতাসুরক্ষা আদালতের উৎস । 


ক্রেতাসুরক্ষার উদ্দেশ্য:


 ( i ) ক্রেতার অধিকারকে রক্ষা , উৎসাহিত এবং উন্নত করা । 

( ii ) যে - কোনাে দ্রব্য বা পরিসেবার মূল্য , পরিমাণ , গুণগত মান ইত্যাদি জানার ব্যাপারে ক্রেতার অধিকারকে মান্যতা দেওয়া ।

 ( iii ) অন্যায় ও অনুচিত ব্যাবসাধারা গ্রহণ বা ক্রেতাকে অন্যায় এবং বিবেক ও বিচারবর্জিতভাবে শােষণ করার বিরুদ্ধে প্রতিকার করার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা । 


ক্রেতাসুরক্ষা আদালতের বিভিন্ন ধরন


ভারতের বিভিন্ন শহরে বিভিন্ন শ্রেণির ক্রেতাসুরক্ষা আদালত গঠনের ব্যবস্থা করা হয়েছে , যেমন


 ( 1 ) জাতীয় স্তরে ক্রেতা - বিবাদ মীমাংসা কমিশন ( NCDRC ) : এটি হল সমগ্র দেশের ক্রেতাদের অভিযােগ নিষ্পত্তির জন্য স্থাপিত আদালত । 1 কোটি বা তার বেশি অর্থ সংক্রান্ত দাবির মীমাংসা করে এই আদালত ।

 ( 2 ) রাজ্যস্তরে ক্রেতা - বিবাদ মীমাংসা কমিশন ( SCDRC ) : এটি হল রাজ্যস্তরে ক্রেতাদের অভিযােগ মীমাংসার জন্য আদালত । 20 লক্ষ টাকা থেকে 1 কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ে ক্রেতার দাবির মীমাংসা করে এই আদালত ।

 ( 3 ) জেলাস্তরে ক্রেতা - বিবাদ মীমাংসা কমিশন ( DCDRF ) : এটি হল জেলাস্তরে ক্রেতাসুরক্ষা আদালত । এই সকল আদালতে 20 লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিবাদের মীমাংসা করা হয় ।


 ক্রেতাসুরক্ষা আদালতের কার্যাবলি : ক্রেতাসুরক্ষা আদালতের প্রধান কাজ হল ক্রেতার প্রতি বিক্রেতার অসাধু ব্যাবসায়িক আচরণ বন্ধ করে বিক্রেতার ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা ।


 ক্রেতাসুরক্ষা আদালতে মামলা দায়ের করা : 

যদি বিক্রেতা বা টাকার বিনিময়ে পরিসেবাদাতা ক্রেতাকে ঠকায় বা প্রতারণা করে তবে ক্রেতা তার বিরুদ্ধে ক্রেতাসুরক্ষা আদালতে মামলা দায়ের করতে পারে । এই সকল আদালতে মামলা দায়ের করা খুব সহজ এবং প্রায় খরচাহীন । কোনাে আইনজীবীকে নিয়ােগ করার প্রয়ােজন হয় না । ক্রেতা নিজেই আদালতে উপস্থিত হয়ে মামলায় তার বক্তব্য রাখতে পারে । ক্রেতাসুরক্ষা আইন পাস করা হয় 1986 সালে । 


 মূল্যায়ন


 পরিশেষে বলা যায় যে , ক্রেতাসুরক্ষা আদালত শুধুমাত্র তখনই ক্রেতার পক্ষে রায় দান করে যদি প্রমাণিত হয় যে , বিক্রেতা বা পরিসেবা প্রদানকারী অনৈতিক ও অন্যান্য আচরণের দ্বারা ক্রেতাকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং ক্রেতাকে হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়েছে । ক্রেতাসুরক্ষা আদালতে মামলা করার জন্য অপরিহার্য প্রমাণপত্র যদি ক্রেতার হেপাজতে না - থাকে , তবে এই আদালতে মামলা দায়ের করে মামলা জেতা ক্রেতার পক্ষে খুবই কষ্টসাধ্য ।








Post a Comment

Previous Post Next Post