ক্ষমতা কাকে বলে ?ক্ষমতার উপাদানগুলি কি কি । ক্ষমতার মূল উপাদান সমূহ । জাতীয় শক্তির মুখ্য উপাদান ।

 ক্ষমতা কাকে বলে ? ক্ষমতার উপাদান গুলি কি কি আলোচনা করো।


                  অথবা


জাতীয় শক্তি বলতে কী বোঝো ? এর উপাদান গুলি আলোচনা করো।


অথবা


জাতীয় শক্তির উপাদান বিশ্লেষন করো ।




ক্ষমতা 


ক্ষমতা বা শক্তির ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Power , যা ফরাসি শব্দ Pouvoir  এবং লাতিন শব্দ Potestas থেকে উৎপত্তি । এর অর্থ হলো সমক্ষমতা।

      আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধারণা হলো জাতীয় শক্তি । এককথায় এর সংজ্ঞা দেওয়া সম্ভব নয় । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে ভূমিকা পালন করতে পারে একটি ছোট রাষ্ট্র সে ভূমিকা পালন করতে পারে না । ভূমিকার  এই উৎসই  শক্তি । রাষ্ট্রের আসল হাতিয়ার শক্তি । শক্তির দ্বরাই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কোনো একটি দেশ নিজের স্থান করে নেয় । ডুচাকেক(Duchacek)-এর মতানুসারে –––"ক্ষমতা হলো প্রত্যাশিত ফলাফল সৃষ্টির সামর্থ্য –– নিজের ইচ্ছাপূর্ণ " হ্যান্স মরগেনথাউ (Hans Morgenthau )-এর মতে," ক্ষমতা হলো অন্যের মন ও কাজকর্মের ওপর একজন মানুষের নিয়ন্ত্রণ "  জোসেফ ফ্র্যাঙ্কেল বলেছেন " অন্যের মন ও কার্যকে নিয়ন্ত্রণ করে কাঙ্ক্ষিত ফললাভের সামর্থ্যই হল ক্ষমতা"


এককথায় ক্ষমতা বলতে অন্যকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করার সামর্থ্যকে বোঝায় , যার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণকারী তার ইচ্ছামতো কাজ করতে অন্যদের বাধ্য করে ।



অর্থনীতি:-


বর্তমানে অর্থনীতি হলো একটি দেশের অন্যতম মানদণ্ড । শিল্পের প্রসার, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি , বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনুকূল অবস্থা ইত্যাদি হল একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির সূচকসমূহ । জনসাধারণের কল্যাণ সাধন ও জীবনযাত্রার মান-উন্নয়নের সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়নের হার সম্পর্কযুক্ত ।



মনস্তত্ত্ব:-


জাতীয় শক্তির অন্যতম উপাদান হলো মনস্তত্ত্ব । একটি জাতির মধ্যে যখন আত্মবিশ্বাস থাকবে , তখন তারা নিজেদের উন্নতিতে সার্বিকভাবে সচেষ্ট হবে তখন তাদের সামগ্রিক উন্নতি ঘটবে । এই কারণে হিটলার জার্মানির মধ্যে আর্য জাতির শ্রেষ্ঠত্ব প্রচার করেছিলেন।



সামরিক শক্তি:-


কোন দেশকে তখনই শক্তিশালী বলা হবে যখন তার সামরিক শক্তি বেশি থাকবে । তবে এই ক্ষেত্রে শুধু সৈন্য সংখ্যা যথেষ্ট নয় , সামরিক বাহিনীকে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হতে হবে । যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানের হিরোসিমা ও নাগাসাকির ওপর পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করে ওই দুটি শহরকে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছিল ।



সরকার:-


 জাতীয় ক্ষমতার ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ । পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ ও নির্ধারিত নীতির পক্ষে জনসমর্থন সংগ্রহ সরকারের গুরুদায়িত্ব।




কূটনীতি:-


 কূটনীতির  গুণগত দিকটি হলো জাতীয় ক্ষমতার উপাদান সমূহের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। একটি দেশের সরকার যে পররাষ্ট্র নীতি নির্ধারণ করে তার বাস্তবায়নের দায়িত্ব অর্পিত হয় কূটনীতিবিদদের উপর। শান্তির সময়ে একটি জাতির পররাষ্ট্রবিষয়ক আচরণের ওপর তার জাতীয় শক্তির হ্রাসবৃদ্ধি যথেষ্ট পরিমাণে নির্ভরশীল। বলাবাহুল্য , এই বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট দেশের প্রতিনিধি হিসেবে বিদেশে অবস্থানকারী রাষ্ট্রদূতদের উপর ।




উপসংহার


পরিশেষে বলা যেতে পারে যে কোন একটি দেশের জাতীয় শক্তি কতখানি তা বিচার করার সময় কেউ কেউ বিশেষ কোনো একটি উপাদানকে এরূপ শক্তির নির্ধারকের আসনে বসিয়ে অন্যান্য উপাদানের গুরুত্ব কে কার্যত অস্বীকার করেন। এরূপ করা আদৌ যুক্তিসঙ্গত নয়। যেসব উপাদান একটি নির্দিষ্ট সময়ে যে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে অন্য সময়ে সেই সব উপাদানের ওই ভূমিকা নাও থাকতে পারে। জাতীয় শক্তির বিভিন্ন উপাদানের অবস্থিতি যথেষ্ট নয় একটি দেশের সরকার সেগুলির যথাযথ ব্যবহার করতে পারছে কিনা তার ওপর ওই দেশের জাতীয় শক্তি নির্ভর করে ।





                                  https://politicalsciencenotesonline.blogspot.com


4 Comments

Post a Comment

Previous Post Next Post